গায়ে ঘনঘন র্যাশ বেরোচ্ছে? সারাদিনে প্রস্রাব হয় খুব কম? গরমেও কম ঘামেন? আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে তো? কারণ, কিডনির কাজই হল শরীর থেকে টক্সিন বা বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া। এককথায়, ছাকনির মতো কাজ করে কিডনি। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে। যে পদ্ধতিতে গোটা কাজটা সম্পন্ন করে, তাকে বলা হয় হোমিওস্টেসিস। তাই কিডনি বেগরবাই করলেই শরীরে টক্সিন জমবে। কী করে বুঝবেন? নীচে উল্লিখিত এই আটটি লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন। কথা বলুন ডাক্তারের সঙ্গে।
১. ফোলা-ফোলা ভাব: কিডনির সমস্যার অন্যতম লক্ষণ প্রস্রাব ও ঘাম কম হওয়া। ফলে সেই জল শরীরের গাঁটে গাঁটে জমে। অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও জল জমতে পারে। যে কারণে মুখচোখ ও শরীর ফোলাফোলা লাগে।
২. মূত্রের সমস্যা: কিডনি বিকল হলে প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়। প্রস্রাবের সময় চাপও বোধ হয়। যদি অনেকক্ষণ ছাড়া ছাড়া প্রসাব হয় এবং প্রসাবের রং গাঢ় হয় বা যদি অস্বাভাবিক পরিমাণে প্রসাব হতে থাকে বা খুব ঘন ঘন ফ্যাকাশে রঙের প্রস্রাব হয়, ধরে নেওয়া যায় কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। রাতে ঘুমের সময় বারবার প্রস্রাব করতে ওঠাও, কিডনির সমস্যার লক্ষণ।
৩. ত্বকে ফুসকুড়ি বা র্যাশ: শরীরে যখন অতিমাত্রায় টক্সিন জমে, অথচ কিডনি কাজ করতে পারে না, ত্বকে তখন ফুসকুড়ি বেরোয়। অন্যান্য চর্মরোগও দেখা যায়।
৪. ক্লান্তি চেপে বসবে: সুস্থ কিডনি থেকে EPO (এরিথ্রোপোয়েটিন) হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন অক্সিজেন বহন করতে আরবিসি বা লোহিত রক্তকণিকাকে সাহায্য করে। কিডনি ফেলিওরে এই হরমোন নিঃসরণ কমে যাওয়ায় আরবিসিতে তার প্রভাব পড়ে। অল্প পরিশ্রমই ক্লান্ত করে দেয়। মস্তিষ্ক ও পেশিকেও প্রভাবিত করে। রক্তাল্পতারও একই লক্ষণ।
৫. শ্বাসকষ্ট: কিডনির সমস্যার একটা কমন লক্ষণ। আরবিসি কমে যাওয়ার কারণে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এর ফলে শরীরে, বিশেষত ফুসফুসে টক্সিন জমতে থাকে।
৬. ধাতব স্বাদ: শরীরে বর্জ্য পদার্থ জমতে থাকার কারণে খাবারের স্বাদে পরিবর্তন আসে। খাবারে রুচি লাগে না। জিভে ধাতব স্বাদ লাগে। মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ বেরোয়।
৭. পিঠে ব্যথা: পিঠের উপরের অংশে যন্ত্রণার সঙ্গে কিডনির সম্পর্ক রয়েছে। কিডনি কাজ না-করলে, পিঠে যন্ত্রণা হতে পারে। আবার কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণের কারণেও এমনটা হতে পারে।
৮. মাথা ঘোরা ও মনোনিবেশ করতে সমস্যা: শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দুটো কারণে হতে পারে। অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা নয়তো কিডনি ফেলিওর। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের জোগান কমে যাওয়ার কারণেই একাগ্রতা কমে যায়। স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। মাঝেমধ্যে মাথাও ঘুরবে।
সুতরাং সারাদিনে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট জাতীয় খাবার ও জল বেশি করে খেতে হবে। প্রসাব ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, সেদিকেও নজর রাখুন।